ঘোড়ারোগ
কিছু রোদ, শুকানো
ভালো। কিছু মর্তের আগুন,
তে-মাথায়
ঢেলে দিও মা। কিছু বরই পাতা, কিছু
বেল পাতা, পুঁতে
রেখো জীর্ণ ছাইয়ের ভেতর।
কিছু
অস্তমিত চাঁদ, কিছু দুঃখ আঁচলে বেঁধে রেখো
শীতার্ত
দিনের জন্য।
শুধু খুন
নয়। তারও দীর্ঘকাল আগে,
যেখানে
এঁকেছিলে
মা বকরেখা; যেখানে শীর্ণকায় চাদরে
মোড়ানো
আমাদের ভালোবাসাগুলো,
কিংবা
তারও পরে
হরিণের বাচ্চাগুলো দৌঁড়ে যেত মাঠ
অবধি, সে তো
কারো বিলাসিতা নয় মা;
এ
শুধুই
গরীবের কিঞ্চিত ঘোড়ারোগ বলে কথা!
মর্তের ঠিকানা
হারপুনের
শব্দে জেগে ওঠে রাত,
অন্ধ
সরাইখানা।
বিলেতি গাবের গন্ধে ঘুম ভেঙে
যায়
শহরের। নগর পিতা ঘুমিয়ে আছেন বগলে
কোলবালিশ
চেপে। মাছের আঁশটে গন্ধ
মসজিদ
মিনারের গায়ে গড়াগড়ি খায়।
দাতব্য
চিকিৎসালয়ে বাড়ে মাছিদের দৌরাত্ম্য
কানাগলি
থেকে কুড়িয়ে পাওয়া পয়সাও মাঝে
মাঝে
ঝনঝন করে ওঠে। শেষ বিকেলের মাঝির
নাভীর
নিচে যে দাগ দেখা যায়,
তার মর্ম বোঝে
না অন্ধ
যুধিষ্ঠির।
আসলে এ
শহরে সবাই পরাজিত সৈনিক।
মর্তের
ঠিকানা খোঁজে খামোখাই কিছু পথভ্রষ্ট লোক।
অত:পর সিরিজ
ক.
ঘৃনা করা খুব বেশি অপরাধ নয়। যে যত বেশি চণ্ডাল
তার ঘৃণাও ততোধিক। উজ্জল উচ্ছল কোন পাখির ঠোঁটে
কৃষ্ণ রঙ মানায় না।
বাড়িতে যে পোষা কুকুর, তারও রয়েছে আহ্লাদি ঢঙ
আর উদ্ভট গরিমানা। বিলেতি ইঁদুরের ছানা দেখলেই
তেড়ে আসে প্রচন্ড বেগে। যেন কতকাল আগের শত্রুতা!
মাছিরাও আজকাল বাড়িতে থাকে না খুব একটা। বহু অলস
বিকেলকে ভোঁ ভোঁ করে তাঁরা ক্লান্ত করেছে খামোখাই।
অত:পর, কোন এক সূর্যিত দিনের শেষে দেখি, সফেদ
লাউয়ের বিচির মত জাঙলায় ঝুলে আছে মৃত মানুষের
কিছু সাদা সাদা দাঁত!
খ.
রোজ রোজই সে আসে। জানালার ফুটো ভেদ করে।
একেবারে ছিচকে চোরের মতন। বউটিও বড় ছিচকাঁদুনে
আজকাল। বিড়াল দেখে একেবারে পুরো বাড়ি মাথায় তুলে
নেয়। বউটির যেন বাচ্চা-বাচ্চা স্বভাব। তবু ভুলো মন
কিছু না কিছু ফেলে রাখবেই রান্না ঘরে।
অত:পর, জানালা গলে পাশের বাড়ির দুধসাদা বিড়ালটা
নি:শব্দে হেঁটে যাওয়া মানে রান্নাঘরে তোমার দুধের বাটি
খালাস!
গ.
অত:পর, এভাবেই সবকিছু খুলে যাওয়া, তারপর চলে যাওয়া
এবং সবশেষে ভুলে যাওয়া, অবশেষে সবটাই নিয়তি।
কিছু মেঘের দু:খ। কিছু ঝরে পরা মেঘের পালক। কিছু
অয়োময় দিন। কিছু নিভৃত লুপ্ত বেদনা। কিছু সৎকার।
আর কিছু আত্মদানের অহিংস পদ ব্রজবুলি। সবটাতেই রয়েছে
অমূলক সূর্যের ঘ্রাণ। আর কিছু ছাইদানিতে লেপ্টে থাকা
অতিশয় জোস্না কিছু ভিজে যাওয়া সঙ্গীত লেগে থাকে চিরকাল
কিছু গীতল সন্ধ্যা জুড়ে-
No comments:
Post a Comment