অর্ধ সত্য
ট্রিং ট্রিং!
ইনবক্সে মেসেজ এসেছে।
-কেমন আছ?
রাত এগারোটা কুড়ি মিনিট। এই
রকম নিরীহ আলুনি প্রশ্ন করার বন্ধু ত নয় রুহুল! শয়তানি করতে ইচ্ছা করল শামিমার আহারে
আমার জন্যে কত ভাবনা আমার বাল্যবন্ধুর! ভাল আছি দোস্ত। তুই?
প্রশ্নটি করেই বুঝল মরিচ্চি।
এবার সাত কাহন শুরু হবে। বউ
থেকে বিছানা কিচ্ছু
বাদ যাবে না।
-তুমি তো আমার খোঁজ রাখো না।
কেমন আছি কখনো জানতেও চাও না! ন্যাকা নেকুমি শুরু করবে বুঝেই শামিমা আগে ভাগেই
বলে দেয়, শরীর
ভাল নেই তাই ফেবুতে বসা হয় না তেমন।
আর ব্যস্ত ভীষণ । এবার আন্তরিক গলায় জানতে চায় রুহুল –কি হয়েছে? ডাক্তার দেখিয়েছ?
-হ্যা রেস্ট করতে বলেছে। তা
তোমার ছেলেমেয়ে কেমন আছে? মেয়ে ফিরেছে ইউএস থেকে?
–নাহ। বুঝলে
ভেবেছিলাম মেয়ে বড় হলে আমাকে বুঝবে। আমার ভাগ্যটাই খারাপ
মেয়েও ওর মার মত আমাকে কোন পাত্তা দেয় না। সংসারে সারা জীবন তেজপাতা হয়ে থাকলাম। তুমি কি কর এত রাতে? তোমার
ভাবি ত খালি ঘুমায়। পাশে যে একটি পুরুষ মানুষ জেগে আছে তা বোঝে না। আবার নীল গলিতে
ঢুকতে চাইছে রুহুল।
-তা তুমিও ঘুমাও ।
–ঘুম যে আসে না। খালি তোমার
কথা মনে পড়ে ময়না। তোমার জন্যে কেন এত মন পোড়ে বল ত
সোনা?
কেস স্পন্ডেলাইটিস। হালকা
গলায় শামিমা বলে, তুমি মনে হয় চৌকিদার বংশের লোক। এক কাজ
কর হাফ প্যান্ট পরে বাঁশি হাতে নেমে পড়। পাড়ার চোর পালাক।
গভির দুঃখ নিয়ে রুহুল বলে,
পাড়ার চোর পালালে কি মনের চোর পালায় ডার্লিং? আমার ঘুম তো তোমার কাছে। এই এই একটি
সত্যি কথা বলবে মনা? তোমার পেটে কি দাগ আছে? মানে প্রেগন্যান্সি স্টার্চ
মার্ক?
একেবারে মধ্য প্রদেশ থেকে
শুরু করেছে ।
এরপর নিচে নামতে শুরু করবে
! কেস জাপানি তেল। শুয়োরের
বাচ্চার সাহস নেই সানি লিওনদের দেখার। বউয়ের
ভয়ে মেয়েও তুলতে পারে না। দুজনেই বিসিএস ক্যাডার। বউ ঘুমালে ফোনে
ফেবুতে মেয়ে বন্ধুদের সাথে কথা বলে সস্তায় গরম হতে চায়। গাধার বাচ্চাটা ব্লক
খাচ্ছে। তাও বোঝে না।– তোর না সোসিওলোজি
ছিল ? একটু পড়াশুনা ত করতে পারিস! এগুলো যদি ভালবাসিস তো বাৎস্যায়নের কামসূত্র পড়ে
দেখ। রাখছিরে – অস্ট্রেলিয়ার ফোন এসেছে—ভাল থাকিস –বাইইইই--
হাসে শামিমা। রেকর্ড করা
রিংটোন চালিয়ে দিয়েছে। রুহুলের সাথে এই করে ওরা। কতবার বুঝিয়েছে, সব অনুরোধ উপদেশ
বৃথা করে যে লাউ সেই কদু। কুকুরের
লেজ ঘি দিয়ে টানলে কি আর
সোজা হয়!
বৈধতা
ইচ্ছাপূরনের
বাস স্টপেজ। আমরা এসেছি ঘুরতে। বহুদিনের ইচ্ছা ছিল লাল দোতলা বাসে চড়ে ঢাকার কোন এক শেষ বাস স্টপেজে
নামব। দেখে নেব শহরের আপাত শেষ কামড় খেয়ে কেমন আছে শহরতলির সবুজ মাটি, মানুষ আর
প্রকৃতি। সঙ্গী হিসেবে সচিবের কাছাকাছি এক কবি বন্ধুকে ডেকে নিই। পচা কুমড়োর মত
মুখ করে এসে দাঁড়ায়। “ছাগল মার্কা সখ তোর। দিবে একদিন কেউ হাঁড়িকাঠে ঝুলিয়ে। তখন বুঝবি।”
বাতাসে উড়িয়ে
দিই ওর তেহাই। কিছু কিছু মানুষ আছে সব কিছুতে অসুখী হতে ভালোবাসে। এই বন্ধুটি তেমন
এক অসুখী ড্রামাবাজ। আমরা অনেকেই জানি ছুটির দিনগুলো হল ওর পরকীয়া দিবস। সারাদিনের
ব্যস্ততায় জমা শরীরের জট ভাঙ্গে ও নিত্য
নতুন বান্ধবীদের ঘন গোপন সান্ন্যিধ্যে। বাচ্চা বাচ্চা প্রেমিকা জুটিয়ে আনে কি করে
যেন। একটি ব্রান্ডের ব্যাগ, দামী সালোয়ার স্যূট কিম্বা ঘড়ি, স্মার্ট মোবাইলেই কাজ সেরে নেয়। বেচারা লমেটু মুখ গোমড়া
করে সিগারেট খাচ্ছে বসে বসে।
ওকে পাত্তা
না দিয়ে নতুন শিং ওঠা ছাগলাছানার মত ছুটে ছুটে দেখি চারপাশ। কতদিন এমন আধা শহর দেখিনা। একটি কাঁঠাল গাছ হাত
পা ছড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে ষ্টেশন চত্বরে। ছেলেবেলার মত লালচে পাতাগুলোর বোঁটায় শক্ত
আঙ্গুল দিয়ে নাড়া দিতেই ঘুরে ঘুরে ঝরে পড়ল
পাতারা। দূরে মরিচ জবার বেড়া দেওয়া একটি বাড়ি দেখা যাচ্ছে। প্রশস্ত উঠোনের তারে উড়ছে হরেক রঙের ছোট বড় জামা কাপড়। একটি কালো
সাইকেল জানালার পাশে
হেলান দিয়ে রেখেছে কেউ। তার পাশে লেবু,
করমচা, গন্ধরাজ আর কাঠগোলাপসহ কি এক ঝাঁকড়া গাছ বোঝা যাচ্ছে না ঠিক। কাঠের গেট
দুলছে অবারিত আহবানে। খুব ইচ্ছা
করে একবার বাড়ির ভেতরে যেতে । এরকম বাড়িতে নিম, পেয়ারা, কৃষ্ণচূড়া আর হাসনুহেনা
গাছের সাথে খুব মায়াময়ী একজন মা থাকে । গেট পেরিয়ে উঠোনে পা রাখলেই যে মা বলে উঠে,
কখন এলি ছোটন ? আয় শরবতটা খেয়ে নে। ঘেমে গেছিস যে!” চোখ ছেপে জল নামে। আমার মা নেই সেই কবে কিশোরী
বেলা থেকে। আমি মনে মনে মার ছবি বানিয়ে কল্পনায় রঙ দিই। অদেখা মার মুখে ভাষা দিয়ে
নিজেও কথা বলি, এইত এলাম । মাগো
বসন্তবরণের ফাংশনে কিন্তু হলুদ শাড়ি সবুজ রঙ কিনে দিতে হবে। মিস বলে দিয়েছে।”
মেয়েটি কখন
এলো দেখতে পাইনি। জিরো ফিগার। বুকের উপর লেপ্টে আছে শিশুটি। স্থলপদ্মের রঙ্গে রাঙা
তার দুই গাল। মায়ের কোলে অথই নিরাপত্তায় থেকে জুল জুল করে দেখে নিচ্ছে আমাদের। কি আদর আদর মুখ। ছুঁয়ে দেব ভেবে
এগিয়ে যেতেই বন্ধুটি এক তীব্র থাবা দিয়ে টেনে আনে। “ উহুম ছুঁতে নেই। ওরা রাতের
মেয়ে।” “তো” “ন্যাকা চৈতেন। চল—” বন্ধুর মুখে ঘৃণাময় তাচ্ছ্যিল্য।
নিত্য নতুন নারীসঙ্গ প্রিয় বন্ধুটি একবারের জন্যেও চোখে চেখে নেয় না মেয়েটির
বুক, পেট, ঠোঁটের অনন্য ভাঁজ । অন্য সময়
মেয়ে দেখলেই লালা ঝরে ওর। এখন বৈধতার আস্ফালনে উড়িয়ে দিচ্ছে দামি ধোঁয়া। আমিও
ছোবলে বিষ ঢেলে দিই। “ অহ রিয়েলি! তুই যে বউ ফেলে রোজ মেয়ে তুলিস তারা কোন বেলার
মেয়ে রে? কি দেয় তারা তোকে ? নিমের ঝোল ?
তখন বৈধতার চুক্তিটা কোথায় রাখিস ? গল্পে, কবিতায় নাকি ইনবক্সে ?”
মেয়েটির
মুখেও ফিনকি দিয়ে উঠে ফিরতি তাচ্ছ্যিল্য।
দুচোখে কখনো ঘৃনা, কখনো ঘন মেঘের কান্না কখনো বা বক্রবিদ্যুতে মাখামাখি শ্লেষ।
কিন্তু সব ছাপিয়ে মাতৃত্ব এসে মুছে দিচ্ছে
ওর মুখের তেরিয়া ঘৃনাভাব। খুব চেনা চেনা লাগে এই মাতৃমুখ।
বিপদে সংঘাতে, প্রতিবাদে প্রতিরোধে আমাদের
মায়েরাও কি এমন খোলা তলোয়ারের মত মুখিয়ে উঠত না? সন্তানের জীবন রক্ষায় তাদের
চোখেও কি জ্বলে উঠত না এমন ভয়াল আগুন ? মুহুর্তে একটি ত্রিনয়নের উন্মোচন ঘটল কি
মেয়েটির মধ্য কপালে? অসুর বধে কত চেনা এই মাতৃমূর্তি। নাকি মাতা মরিয়মের মুখ !
শিশু যীশু কোলে ঝড় জল বরফগলা পথে হেঁটে চলেছেন একা একাকী এক সাধ্বী নারী! সভ্যতার
আলো দিতে এই শিশুকে যে বাঁচাতেই হবে। দু
পায়ে দলে যাচ্ছেন হলুদ বিদ্রুপ বাণ। অশ্লীল বাক্যবাণ। চকিতে বদলে যায় সেই মুখ।
এতো আদি জননী বিবি হাওয়া। জলপাই গাছে
হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন শিশু কোলে। অনাবৃত বুকে তীব্র অহংকারে জমে আছে মাতৃত্বের সজল ঘন উচ্চতা। দূরে জলপাই বনে খেলায়
মেতেছে অন্য শিশুরা। ওই যে বার বার হোঁচট
খেয়েও আবার উঠে দাঁড়াচ্ছে যে নগ্ন উদোম শ্যামা শিশুটি সে তো আমি! বাবা আদম গেছে
কাঠ কুড়াতে।
আচ্ছা কে
বলতে পারবে জননী হাওয়ার সাথে বাবা আদমের বিয়ে কবে, কোথায় কোন স্বর্গ বা নরকে হয়েছিল? কে পড়িয়েছিল সেই
বিয়ে ? সে কি কোনো হুজুর নাকি কোনো সোনালীডানা ফিরিশ্তা? কারা ছিল সেই বিয়ের
সাক্ষী ? কত টাকার মোহরানা ছিল? বৈধতার চুক্তিপত্রটি কি আছে সযত্ন সমারোহে? নাকি
আমরাও-
মাতালের সাম্য ভাবনা
চম্পা মিশন ইশকুলে আমাদের সাথে পড়ত।
প্রথম কয়েকদিন আমাদের সাথেই বসেছে। গল্প করেছে। খেলেছে। হেসেছে। কিন্তু একদিন বড়
সিস্টার এসে ক্লাশ মিসকে ডেকে বারান্দা দেখিয়ে কি যেন বলে দিল। চম্পাকে মিস
ক্লাসরুম ঘেঁষা বারান্দায় গিয়ে বসতে বল্ল। চম্পা বসল কিছুদিন তারপর একদিন ইশকুলে আর এলোই না।
চম্পার বাপু সুইপার । রোজ সন্ধ্যায় মদ
খেয়ে চৌরঙ্গিতে নাচে গায় তামাসা করে। লোকেরা ভিড় করে দেখে হাসে। দুখীরামের বউ হাত
ধরে, ই মরদ ঘরকে চল্ না কেনে! যেতে যেতে দুখিরাম গান গায়, পৃথিবী আমাকে চায়,
কিন্তু আমার বউকে কেউ চায়না।
ভিড় জমে জনসভা।
মাঝে মাঝে চম্পাও আসে বাপুকে নিতে। আমরা এখন বড় হয়েছি। চম্পার সাথে কথা বলিনা, খেলিনা।
চম্পাও কথা বলেনা, দেখেও দেখে না। সরকারী ইশকুলে চান্স পেয়ে দল বেঁধে ইশকুলে যাই।
একসাথে চীৎকার করে কবিতা
পড়ি, গাহি সাম্যের গান, মানুষের চেয়ে বড়
কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান, নাই জাত পাত-
চম্পা ইশকুলের বারান্দা, মাঠ, বাথরুম
পরিষ্কার করে। বাথরুমের কাছে বড় বড় বালতি, ইয়া বড় ডাইনি ঝাড়ুর পাশে মেঝেতে বসে
থাকে। আমরা আরো বড় হতে থাকি । একদিন মাথায় সিঁদুর দেখে বুঝি চম্পার বিয়ে হয়ে গেছে।
সুইপার কলোনির কাছে বাসা বন্ধু শামিমার। নাক সিটকে ঘেন্না ঘেন্না মুখ করে বলে ওরা
মদ খায় জানিস। মেথর ত তাই মদ খায়।
ভদকা মার্টিনির গ্লাসটি মুখে নিয়ে গলে
যাচ্ছে শামিমা। গমগম করছে বৈশাখী আসর। নাতাশা গাইছে, একদিন বাঙ্গালী ছিলাম রে –
আমরা গ্লাস হাতে দুলতে দুলতে তাল দিই, বাঙ্গালী ছিলাম রে। মানিক কপালের উপর গ্লাস
রেখে ক্যারিক্যাচার দেখায়। তুলিকাকে নিয়ে ড্যান্স করে, গান গায় জড়ানো গলায়, পৃথিবী
আমাকে চায় -আমি শামিমাকে দেখি শামিমা আমাকে। বেহেশতি তরলে হাসতে হাসতে আমরা ভেসে
যাই। গড়িয়ে পড়ি ইশকুলের বারান্দায়। বড় বড় বালতি আর ডাইনি ঝাড়ুর পাশে থেবড়ে বসে
শামিমা বলে, মদের কোন ক্লাশ ফ্লাস নাই বুঝলি! আর অই জাতপাত? সব শালা মাইনষের
বানানো! দেখ্ তো আমার লুক চম্পা চম্পা লাগছে কিনা!
ইমফ্যাচুয়েশন
রুমকি মাঝে মাঝেই ধপাস ধপাস প্রেমে পড়ে। কারো
ছবি দেখে, কারো গল্প কবিতা পড়ে কাউকে আবার
সামনা সামনি একটু হাসি, গোছানো দাঁতের সারি সংবদ্ধ ঠোঁট দেখে। পুরুষটি
হয়ত জানেও না । কিন্তু রুমকি মরে। তবে অই একদিন দুই রাত। খাঁটি প্রেমিকার মত সৎ, মায়াময়, একেবারে সব দিয়ে থুয়ে আস্তে ধীরে আবার নিজের
কাছেই ফিরে আসে।
এই একদিন দুই রাত ধপাস প্রেমিকের সাথে সে সারাজীবন কাটিয়ে দেয়।
বিছানা বালিশ থেকে তরিতরকারী মাছ মাংস ছেলেমেয়ে তাদের বিয়ে শাদি এমনকি
মৃত্যু পর্যন্ত কল্পনা করে তিনদিনের
মাথায় ওর মায়াজমের ইতি ঘটে। বান্ধবীকে বলে, তোর হয়?
স্বামির শার্ট ভাঁজ করতে করতে বান্ধবী জানায় , খুব হয়। ইনফ্যাক্ট
সবার হয় রে গাধা। পঁয়ষট্টি বছরের এক বিধবা
নারীলেখক অকপটে জানায়, হুম আমারো হয়। এই
তো সেদিন নারায়ণগঞ্জে এক বিয়েতে একজনকে দেখে কিছুতেই রাতে ঘুমুতে পারিনি। শেষে কল্পনায় জড়িয়ে আদর করে
একসাথেই ঘুমালাম।
ওযযা, বলে কি! তার মানে সে
একা এই রোগে ভোগে না।
রুমকির আবার একটু বাম রাজনীতির গন্ধ থাকলে হেভি লাগে। বাম হাতে
এলাচ লেবু কচলানোর মত। চুল ঠিক করার ফাঁকে
ফাঁকে বামহাতের আঙ্গুল শুঁকে টুকটুক চুমু
খাওয়া এই আর কি। এই দুদিন ভাত
পোড়ে, ডাল শুকায়, তরকারী আলুনে হয়, চায়ে
নুন গলে , আলুভর্তায় সর্ষে তেলের জায়গায় মধু ঢালে। কর্তা দাঁতমুখ
খিঁচিয়ে চেয়ার উলটে অফিস চলে যায়। অনেক
রাতে বান্ধবীর সাথে ডিনার সেরে ঘরে ফিরে মেয়েদের রেসলিং দেখে।
বান্ধবী সাইকোলজির বই খুলে ইনফ্যাচুয়েশন
চ্যাপ্টার বের করে বলে, ভাল করে পড়। মেয়েরা চুপিয়ে রাখে। কেননা মেয়েদের ডিল্যুশন বেশি। ছেলেরা পাকিয়ে ফেলে কারন তাদের সেক্স আগে। এই একদিন
দুই রাতে কারো কারো চেনা পৃথিবী সারা জীবনের জন্যে উল্টে যায়, কেউ কেউ সামলে নেয়। সামলে নিলে বন্ধুত্বটা জমে ভাল। তোর আছে?
আছেই তো। দেখিস না কায়সারের অফিসে গিয়ে কত গল্প করি। যখন তখন ফোন করি। বরের নামে
ছেলেমেয়েদের নামে সারা দুনিয়ার সবার নামে কত নালিশ করি। চা ফা খেয়ে আবার ঘরে ফিরি।
বন্ধুত্বে একটি ভালবাসার নদী থাকে। ইচ্ছানদী। ন্যাংটো। মায়াবি। সে নদিকে
সহজ সরল আনন্দে সব কথা বলা যায়। আমি খুব চঞ্চল তাই কি নদীটা পুকুর হয়ে ভরে যায় ? এত করে চাইলাম সায়ক কিছুতেই বন্ধু হল না !
পঁয়ষট্টি বছর হাসে। আমি আগেই বুঝেছিলাম। সব সময় ফর্মূলা খাপ টু খাপ
খাটে না। সায়ক কখনো তোমার বন্ধু হবে না। ও তোমাকে রক্তমাংসে চেয়েছিল। পায়নি এবার ফাঁক পেলেই বরং খোঁচাবে। লেখায় দেখায় কথায় বন্ধুতে
শত্রুতে আড়ালে সামনে। ওর অহং বোধ চরম। এরা প্রেমিক থেকে কিছুতেই বন্ধু হতে চায় না। একপেশে অন্ধ বদ্ধ টাইপ মানুষ। যতই বাম কবি হোক না কেন।
কায়সারের সাথে ফোনে পিকনিক
স্পট নিয়ে দুমিনিট ঝগড়া শেষে লাভ য়ু বলে হাসে বান্ধবী, সবাই কি বন্ধুত্বের ভালবাসা
নিতে জানে নাকি রে পাগলি? নিতে এবং দিতেও
জানতে হয়। তুই চেষ্টা করেছিস ব্যস রেখে দে এবার। অনেস্টলি সরে আয়।
রুমকি ফুলকপি পাকোড়া ভেঙ্গে খেতে খেতে সায়ক থেকে সরে আসে। শালা
বাঞ্চোত! নিজেই উইক হয়ে এখন নিজেই নিজেকে লুকোচ্ছে। বাজে খচ্ দিচ্ছে সবাইকে। রুমকি নাকি নিত্য
নতুন পুরুষ চেটে আনন্দ পায়। রুমকি ঠিক
করে ইনফ্যাচুয়েশনের দুই পাতা
কপি করে সায়ককে পাঠিয়ে দিয়ে সিস্টার নিবেদিতাকে নিয়ে লিখতে বসবে। কার
ইনফেচুয়েশন আগে কেটেছিল? সিওর নিবেদিতার। তাই তো পরম মায়া নিয়ে সিস্টার নিবেদিতা হতে পেরেছিল।
No comments:
Post a Comment