31 March 2016

রোকসানা লেইস



ছায়াপথের সীমানায়

সোনালী সময়গুলো কেমন উজাড় হয়ে যায়।
জলের ধারা উজানে যায় যেমন, সুদূর অতিত সাথে।
প্রতিবার ঘাস ফড়িং ও শালিকের ধানী রঙ মেখে, নেমে যাই অরণ্য গন্ধ হ্রদে।
শীতল ধারায় ধুয়ে নেই না বলা কথা।

কখনো মেখলা আকাশ হয়ে যাই তোমার বুকে মুখ রেখে।
আর্কিমিডেসের সূত্রের মতন ছলকে যায় অনেক কথন।
ইউরেকা শব্দে প্রাণবন্ত হয় শান্ত জগত।

বসন্ত সমিরণ বয় খাঁ খাঁ পথ জুড়ে।
রাত্রির নিরবতা মুখর করে ঘুঙ্গুর, কেউ হাসে কেউ কাঁদে।
আমি দু চোখ ভরে তুলে নেই শব্দের জোড়াল জোয়াল, কখনো চাষ করব বলে।
একলা বসে থাকে পথিক জনারণ্যে।

ইডিপাস ভাবনা অথৈ অতল, স্বর্গীয় ঐশ্বর্যপূর্ণ অথচ মলিন।
জরাজীর্ণ বিলীন পম্পেই নগরী অথবা তাহোকু আঘাত ।
ভয়ধরা শিরদাঁড়া সব হারানোর ব্যথায় কুঁকড়ে উঠে।

তবু চলমান ধাতব শব্দের মতন ক্রমাগত বয়ে যায়।
ভাবনার সুগভীর চাকা ক্লান্তিহীন তাড়িয়ে নেয়, সূর্যদোয় থেকে অস্তরাগে
প্রতি মূহুর্তের নিঃশ্বাসের মতন, বহমান জগ সংসার, ভালোবাসা সুনীল স্বপ্নে।
মিলে মিশে থাকে অবিচল।



ঠিক বারোটায়

কবিতা শুনতে খুব ইচ্ছে করছে কিন্তু না তুমি এখন বিদ্রোহি তান ধরো না।
আমি এটু আবেগী কিছু শুনতে চাই।
আবেগ সেতো বিদ্রোহীতেও আছে অথবা মৃত্যু উপত্যকায় কিংবা কিংবদন্তি
যদি ছূঁতে পারে হৃদয়।
আছে তবে তা নয়। কিছুটা ভেজা নরম শিউলি রঙ কিছুটা জোছনার মতন।
আঁধো আলোছায় যদি কখনো জলের গানের মতন মৃন্ময়ি কঙ্কন বেজে উঠে।
ঠিক তুমুল নয়; যেন নীল শর আকাশ রক্ত করবী।
রক্ত করবী! তুমি ঠিক জানো তো তুমি কি চাও?
জানি, তবে মাঝেমাঝে এলোমেলো হয়ে যায়।
মাঝে মাঝে সব মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়।
ভাগটা ঠিকঠাক রাখতে হবে।
যদি না রাখি।
যদি কৃষ্ণ বরণ কুন্তাকিন্তে বা মহাজনের মাঝি রাণীর প্রসাদ বা ভ্যাটিকান সিটি এক করে ফেলি।
তবে কি আমাকেই একা কোনো দূর দ্বীপে পাঠিয়ে দিবে তোমাদের এই সচেতন সমাজ?
দিতে পারে। তাই সাবাধান থেকো।
মায়াবী মুখের মতন চাঁদ যখন দেখি, তোমার কথা ভাবি। জান্নাতের হুর পরী আর তুমি মিলে মিশে যাও।
মক্তবে শিখা বয়ান, ফুলসিরাতের পুল তখন বড় বেশী যন্ত্রণা দেয়।
জারুলের বনে বেগুনী ফুলের নাচন দেখে, কৃষ্ণ হয়ে বাঁশি বাজাতে ইচ্ছে করে তমুল
রাধার মতন তুমি ছুটে আসবে জীবনে, এই ভাবনাই বেশী ভালোলাগে।
তুমিও মিলিয়ে দিচ্ছো সব। ভেবে বলছো তো!
হৃদয় উসারিত স্রোতের নদী নিয়ে ঠিক বারোটায় দাঁড়িয়ে থাকা।
ক্লান্তি খরনের পথ বেয়ে চলে যায় বহুদূর। মেঘের মতন মিশে আকাশের গায়।
ঠিক বারেটা, তুমি করিড়োরে অপেক্ষায় চাতক, দুপুরের সূর্য মধ্য গগনে ঠিক বারোটা
তোমার আকণ্ঠ অপেক্ষা পারদের উঠা নামা শরীর ও মনে দুজনের
অথচ পথ চলে যায় দুই দিকে।
কত বছর বাদে?
বারো
আবারও বারো? যুগের প্রভাব রয়ে গেলো এখনও আমাদের ঘিরে। সনাতন অথবা আধুনিক
কোন ভুবনে আমাদের বাস? কোন জটিল সীমারেখা জড়িয়ে রাখে, ক্লান্তির ঘামে নুয়ে দিতে চায় নিকানো উঠান।
তোমাকে নিয়ে যেতে চাই এক জায়গায় যাবে?
কোথায়, কতদূর?
দূরে নয় বাড়ির কাছে আরশি নগর, ভাবনার দ্বর খুলে লালনের কাছে,
সেখানে না হয় খুঁজব দুজনে, কি জাত এই সংসারের...কতটা ভেবে বলতে হবে কথা।

 কেন হৃদয়ের কছে থেকেও এই দূরে থাকা।

No comments:

Post a Comment